সফিকুল ইসলাম রিংকু : নায়েরগাঁও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এমপিও ভুক্ত সহকারী গ্রন্থাগারিক ( লাইব্রেরিয়ান) পদে জাল সনদে ভালোই চলছিল তার চাকুরী। জাল সনদের বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ার ঘটনায় অভিযোগ থেকে বাঁচাতে চাকুরী অব্যাহতি দেন তিনি।
জানা যায়, মতলব দক্ষিণ উপজেলার নায়েরগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী গ্রন্থাগারিক হিসেবে ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি নিয়োগ পান বিদ্যালয়ের খন্ডকালীন শিক্ষক সোহরাব হোসেন। চাকুরির প্রায় ২০ মাস পর এক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সোহরাব হোসেন জাল সনদ ও রাজনৈতিক প্রভাবে ওই পদে নিয়োগ পান। এদিকে জাল সনদের বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় ঘটনায় অভিযোগ ও ঝামেলা এড়াতে নিজ থেকেই চাকুরী অব্যাহতি দেন তিনি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এমপিও ভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বিধি ২০১৮ অনুযায়ী মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সহকারী গ্রন্থাগারিক/ ক্যাটালকার পদে নিয়োগের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা হলো, স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান বিষয়সহ স্নাতক ডিগ্রী/ সমমান অথবা স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী/ সমমান গ্রন্থাগার বিজ্ঞানে ডিপ্লোমা এবং সমগ্র শিক্ষা জীবনে যেকোনো ১ টিতে ৩য় বিভাগ/ সমমান গ্রহণযোগ্য হবে। কিন্তু সোহরাব হোসেন গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান বিষয় নিয়ে স্নাতক/ সমমান ডিগ্রি পড়েননি।
তিনি বিদ্যালয়ের সহকারী গ্রন্থাগারিক পদটি বাগিয়ে নিতে নিয়োগ কমিটির যোগসাজশে গ্রন্থাগার বিজ্ঞানে জাল ডিপ্লোমা সনদ দাখিল করেন। জাল সনদের বিষয়টি উপজেরা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর এক ব্যক্তির লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধানে জাল ডিপ্লোমা সনদের তথ্য বেরিয়ে আসে।
ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে চাকুরীর জন্য জাল সনদের তথ্য প্রকাশ হলে, সোহরাব হোসেন ঝামেলা এড়াতে নিজ থেকেই চাকুরী অব্যাহতি চেয়ে প্রধান শিক্ষকের নিকট একটি আবেদন করেন। আর এই আবেদনের প্রেক্ষিতে ম্যানেজিং কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং সভায় জাল সনদে চাকুরীর বিষয়ে সোহরাব হোসেনের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষককে নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হুমায়ুন কবির বলেন, কমিটির সাবেক সভাপতি রিপন মিয়া ও অন্যান্য সদস্যদের সম্মতিক্রমে তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়। উপজেলা শিক্ষা অফিসার আঃ রহিম খানের উপস্থিতিতে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। চাকুরী থেকে অব্যাহতি চেয়ে সোহবার হোসেন একটি আবেদন করেছেন।
এই বিষয়ে অভিযুক্ত সহকারী গ্রন্থাগারিক সোহরাব হোসেনের মুঠোফোনে (০১৯৩৯২৮৯৬৯২) একাধিকবার কল করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ম্যানেজিং কমিটির বর্তমান সভাপতি লায়ন জয়নুল আবেদীন বলেন, জাল সনদ ও চাকুরী থেকে অব্যাহতি চাওয়ার বিষয়ে আমরা মিটিং করেছি। এই বিষয়ে বিধি মোতাবেক উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করে প্রধান শিক্ষককে ব্যবস্থা গ্রহণে বলা হয়েছে।
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আঃ রহিম খান বলেন, আমরা নিয়োগ পরীক্ষা নিয়েছি, কিন্তুুু সনদ যাচাই বাছাই করার কোন সুযোগ নেই। এই বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভালো বলতে পারবেন।